বাউফল প্রতিনিধি ॥ যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রী’র কান কেটে দিয়েছেন এক পাষন্ড স্বামী। এরপর ৪ বছরের এক শিশুসহ তাকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ওই গৃহবধূ ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় গতকাল সোমবার (২৬ এপ্রিল) বাউফল থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। ওই গৃহবধূর নাম রাবেয়া খাতুন। স্বামীর নাম মোঃ মাহাবুব আলম। পটুয়াখালীর বাউফলের চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের চর দিয়ারা গ্রামে তার বাড়ি। গৃহবধূ রাবেয়া খাতুন তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ৮ বছর আগে (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩) উপজেলার চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের চর দিয়ারা ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ কালু হাওলাদারের ছেলে মোঃ মাহবুব আলমের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার গরীব বাবা স্বর্ণাংকারসহ আসবাবপত্র প্রদান করেন। বিয়ের পর কিছু দিন তিনি সুখে শান্তিতেই ছিলেন। তাদের সংসারে বাইজিদ নামের ৪ বছরের একটি ছেলে আছে। তার স্বামী মোঃ মাহাবুব পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কুপ্ররোচনায় তার কাছে যৌতুক দাবি করে। তার বাবা তার সুখের কথা চিন্তা করে তার স্বামীর নামে ২১ কড়া (স্থানীয় মাপের) জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। এরপর কিছু দিন যেতে না যেতেই তার স্বামী পুনরায় ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তিনি ওই টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনা জানার পর তার বাবা ও বড় ভাই গত ২৪ এপ্রিল সকালে তার স্বামীর বাড়ি যায় এবং স্থানীয় লোকজন নিয়ে সালিস বৈঠক করেন। সালিস বৈঠক চলাকালে উত্তেজিত হয়ে তার স্বামীর নেতৃত্বে পরিবারের অন্যান্য লোকজন তাদের উপর হামলা করে। তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে তার বাম কান কেটে দেয় এবং ওই অবস্থায় তাকে সন্তানসহ তাড়িয়ে দেয়। পরে বা ও ভাইসহ স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে। এ ঘটনার পর তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন সালিস বৈঠকের মাধ্যমে ঘটনাটি নিষ্পত্তির আশ্বাস দিয়ে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। পরে নিরুপায় হয়ে সোমবার তার স্বামীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আল মামুন বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Leave a Reply